"ফিসফিসে ছায়া: রহস্যময় বাড়ির অন্তর্গত ভয়ঙ্কর গল্প" - দ্বিতীয় অধ্যায়

 "ফিসফিসে ছায়া: রহস্যময় বাড়ির অন্তর্গত ভয়ঙ্কর গল্প" - দ্বিতীয় অধ্যায়

 

গ্রামের মানুষদের বিশ্বাসে আর বাড়ির চারপাশে ছড়িয়ে থাকা অদ্ভুত ঘটনাগুলোর কারণে সারাহর পরিবার পুরনো বাড়িটা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেল। কিন্তু বাড়িটা ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও, রাতে অদ্ভুত ফিসফিসানি আর ছায়ামূর্তির উপস্থিতি লোকদের কাছে সেই অভিশপ্ত বাড়ির গল্পকে আরও ভীতিকর করে তুলল।

সারাহর বাবা-মা শোক আর অপরাধবোধে ভেঙে পড়েছিলেন। কিন্তু একজন ব্যক্তি, একজন প্যারানরমাল গবেষক নামক ডক্টর আরিয়ান, সেই বাড়ির ঘটনাগুলো নিয়ে গবেষণার আগ্রহ প্রকাশ করলেন। তার মতে, অতীতের প্রতিটি রহস্যের একটা ব্যাখ্যা থাকে। তিনি বাড়িটা নিয়ে গ্রামের পুরনো নথিপত্র আর গল্প ঘাঁটতে লাগলেন।

একটি পুরনো রহস্য উদঘাটন:

ডক্টর আরিয়ান খুঁজে পেলেন বাড়ির আগের মালিকের গল্প। লোকটি, মিস্টার জোসেফ কার্টার, ছিলেন একজন শিল্পপতি যিনি একদিন বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। স্থানীয় লোকদের বিশ্বাস ছিল, তিনি তার সম্পত্তি নিয়ে গ্রামে অন্ধকার কিছু কাজ করেছিলেন। কেউ বলত, তিনি আত্মার সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন, আর সেই কারণেই বাড়ি অভিশপ্ত।

ডক্টর আরিয়ান বাড়িটির বেসমেন্টে একটি গোপন কক্ষের সন্ধান পান, যা স্থানীয় নথিপত্রে উল্লেখ ছিল না। সেই কক্ষটি ছিল ধূলোমলিন, চারপাশে পুরনো মোমবাতি আর মধ্যযুগীয় প্রতীক চিহ্ন আঁকা। তিনি বুঝতে পারলেন, এখানে কোনো ধরনের অদ্ভুত আচার-অনুষ্ঠান হত।

রাতের অভিযান:

ডক্টর আরিয়ান বাড়িটির ভেতর রাতে থেকে ঘটনার গভীরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার কাছে ক্যামেরা, রেকর্ডিং ডিভাইস আর প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছিল। গভীর রাতে, যখন ঝড়ের মতো হাওয়া বইছিল, তিনি লিভিং রুমে বসে বাড়ির আওয়াজ রেকর্ড করতে শুরু করলেন।

তখনই ফিসফিসানি শুরু হলো।

“আরিয়ান...”

এইবার গলার স্বরটি পরিষ্কার। ডক্টর আরিয়ান আলো জ্বালিয়ে টর্চ হাতে শব্দের উৎস খুঁজতে বেসমেন্টে নামতে লাগলেন। সেখানে পৌঁছে দেখলেন কক্ষের মাঝখানে একটি পুরনো আয়না। সেই আয়নায় এক ঝলক দেখলেন সারাহর প্রতিচ্ছবি, যেন সে অন্যপাশে আটকা পড়ে আছে।

“আমাকে মুক্ত করো...” সারাহর কণ্ঠ শুনতে পেলেন তিনি।

ডক্টর আরিয়ান অবাক হয়ে গেলেন। তিনি বুঝতে পারলেন, সারাহ এখনও জীবিত, কিন্তু অন্য এক জগতে বন্দি। তার চারপাশে ছায়ামূর্তিরা নড়তে শুরু করল। মোমবাতির আলো কেঁপে উঠল।

মুক্তির পথ:

আরিয়ান তার সরঞ্জাম ব্যবহার করে বুঝলেন, এই বন্দিত্ব ভাঙার জন্য একটি পুরনো মন্ত্র দরকার, যা বাড়ির মালিক জোসেফ কার্টার একসময় লুকিয়ে রেখে গিয়েছিলেন। সেই মন্ত্র পুরনো নথিপত্রে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল।

তিনি সারাহকে প্রতিশ্রুতি দিলেন, “তোমাকে আমি ফিরিয়ে আনব।”

কিন্তু তখনই ছায়ামূর্তিরা আক্রমণ করল। তার ক্যামেরা ভেঙে পড়ল। দরজাগুলো বন্ধ হয়ে গেল। ছায়ামূর্তিরা গর্জন করে উঠল, “তাকে এখানেই থাকতে দাও... সে আমাদের।”

আরিয়ান কি সারাহকে মুক্ত করতে পারবে? নাকি সেই বাড়ির ছায়ারা তাকে চিরদিনের জন্য আটকে রাখবে?

চলবে...

Comments